কাজা নামাজ পড়ার সময় - ফজরের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম ও সময়

অনেক সময় আমাদের নামাজ কাজা হয়ে যায় বিভিন্ন কারণে তখন আমাদের কাজা নামাজ পড়ার সময় সম্পর্কে জানতে হয়। আমরা যদি কাজা নামাজ পড়ার সময় সম্পর্কে জেনে রাখতে পারি তাহলে তা আমাদের জন্য খুবই উপকারী। তাই আজকের এই আর্টিকেলে কাজা নামাজ পড়ার সময় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

তাহলে চলুন দেরি না করে ঝটপট কাজা নামাজ পড়ার সময় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। উক্ত বিষয়টি জানতে হলে আপনাকে এই আর্টিকেলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

সূচিপত্রঃ কাজা নামাজ পড়ার সময় - ফজরের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম ও সময়

কাজা নামাজ পড়ার সময় - কাজা নামাজ আদায়ের পদ্ধতি

ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ হল নামাজ। অর্থাৎ ঈমান আনার পরে সর্বপ্রথম নামাজ পড়ার কথা বলা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, "ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নামাজ পড়া অর্থাৎ প্রথম ওয়াক্তে নামাজ আদায় করাই হলো সর্বোত্তম আমল।" তারপরেও বিভিন্ন কারণে মানুষের নামাজ ছুটে যায়। কোন কারনে যদি নামাজ ছুটে যায় তাহলে পরবর্তী কাজ হল কাজা নামাজ আদায় করা।

আরো পড়ুনঃ মসজিদে প্রবেশের দোয়া ও মসজিদ থেকে বের হওয়ার দোয়া

নির্ধারিত ওয়াক্তে ফরজ ও ওয়াজিব নামাজ আদায় করতে না পারলে, সময় চলে যাওয়ার পর সেই নামাজ আদায় করা কে বলা হয় কাজা নামাজ। কাজা নামাজ পড়ার সময় এবং কাজা নামাজ আদায়ের পদ্ধতি রয়েছে। সঠিকভাবে কাজা নামাজ আদায় করার জন্য আমাদেরকে অবশ্যই কাজা নামাজ আদায়ের পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।

নফল নামাজেরও কাজা নামাজ আদায় করতে হয়। যদি কোন কারণে নফল নামাজ নষ্ট হয়ে যায় অথবা শুরু করার পর কোন কারণে যদি ছেড়ে দিতে হয় তাহলে তারপরে কাজা করা ওয়াজিব। সুন্নতে মুয়াক্কাদা এবং নফল নামাজ তবে ফরজের নামাজ সুন্নত ফরজ উভয়টা পড়তে না পারলে সুন্নত ফরজ একসঙ্গে কাজা দেয় করা সব থেকে উত্তম।

দুপুরের চার রাকাত সুন্নত পড়তে না পারলে তা ফরজের নামাজ আদায়ের পরে পড়ে নেওয়া যায়। কাজা নামাজ আপনি দুইভাবে আদায় করতে পারেন।

প্রতিদিন ফরজ নামাজের সঙ্গে এক অথবা দুই দিনের করে কাজা নামাজ পড়বেন এবং প্রত্যেকবার নিয়ত করবেন " আমার জিম্মায় যত ফজরের নামাজ কাজা আছে, তার অনাদাইকৃত প্রথম ফজরের কাজা আদায় করছি।" এভাবে প্রতিদিন কাজা আদায় করতে পারেন। প্রতিভার একই নিয়ত করতে হবে।

প্রথমে এক বছরের শুধু ফজরের নামাজ আদায় করতে হবে। নিয়তের ক্ষেত্রে বলতে হবে, " আমার জীবনের তাজা হওয়া প্রথম ফজরের কাজ আদায় করছি।" আপনি প্রতি ওয়াক্তের সঙ্গে পাঁচ ওয়াক্ত ফজর, জোহরের সময় আর পাঁচ ওয়াক্ত ফজর তারপর এশার পর আবার তাহাজ্জুদের সময় আরো পাঁচ ওয়াক্ত ফজর করতে হবে।

ফজরের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম ও সময় - ফজরের কাজা নামাজ পড়ার সময়

একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হয়। কিন্তু অনেক সময় আমাদের সময় মত নামাজ আদায় করা হয় না যার ফলে সেই নামাজ সেই কাজা হয়ে যায়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমের উপর নামাজ ফরজ তাই নামাজ বাদ দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। কাজা নামাজ পড়ে আদায় করার বিধান রয়েছে। সেই জন্য আমাদেরকে ফজরের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম ও সময় জানতে হবে।

আমরা অনেকেই ফজরের কাজা নামাজ পড়ার সময় যায় না। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, "নামাজ মুমিনের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ"{ সূরা নিসা আয়াতঃ ১০৩} আপনাদের জানার সুবিধার্থে ফজরের কাজা নামাজ পড়ার সময় নিজে উল্লেখ করা হলো।

কোন অপারগতার কারণে নামাজ সময় মত আদায় করতে না পারলে উক্ত অপারগতা হজম হওয়ার পর ওই নামাজ কাজা আদায় করা ফরজ। {সহীহ বুখারী হাদিসঃ ৫৬২}

ফরজের কাদা ফরজ আরো ওয়াজিবের কাজা ওয়াজিব। {সহীহ বুখারী, হাদিসঃ ৫৬২} সুন্নত আর নফল এর কাজা নামাজ হবে না। তবে সুন্নত ও নফল নামাজ আরম্ভ করার পর ভেঙ্গে গেলে তা কাজা করা আবশ্যক। { সূরা মুহাম্মদ আয়াতঃ ৩৩}

ফজরের নামাজ যদি সময় মত না পড়তে পারেন তাহলে সূর্য উদয়ের পরে আদায় করবেন। তবে সূর্য যখন উঠবে তখন নামাজ পড়া নিষিদ্ধ যায় তখন নামাজ আদায় করা যাবে না। এই জন্য সূর্য ওঠার কমপক্ষে ১০-১৫ মিনিট পর কাজা নামাজ আদায় করতে হবে। সূর্য উঠার পর থেকে যোহরের আগ পর্যন্ত যেকোনো সময় ফজরের নামাজের খাজা আদায় করে নিতে পারবেন। তবে সূর্য উঠার পর যত দ্রুত সম্ভব কাজা নামাজ আদায় করতে হবে।

আসরের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম

জোহরের নামাজের পরে আসরের নামাজ আদায় করতে হয়। কোন কারনে যদি জামাতের সাথে আসরের নামাজ আদায় না করতে পারি তাহলে আসরের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম জানা থাকলে আমরা খুব সহজেই আসরের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম অবলম্বন করে নামাজটি আদায় করে নিতে পারি। আসরের পর সূর্য হলদে ভাব ধারণ করার আগ পর্যন্ত কাজা নামাজ আদায় করা যাবে।

আরো পড়ুনঃ রমজানের গুরুত্বপূর্ণ ৮ টি ইবাদাত - রোজার ইবাদতের ফজিলত 

যদি কারো সিজদায়ে তেলাওয়াত থাকে তাহলে সেটিও আদায় করা যাবে। তবে হলুদ বর্ণ ধারণ করলে তার কাজা নামাজ পড়া যাবে না। একজন মুসলিমের জন্য জেনে রাখা ভালো যে সূর্য ডুবে যাওয়ার আগে সূর্য ক্ষণিক হলদে রং ধারণ করে থাকে। এই সময়ের আগ পর্যন্ত আসরের নামাজের সময় বাকি থাকে।

এর পরে যখন সূর্যের রং হলুদে ধারণ করে তখন নামাজের হারাম ওয়াক্ত শুরু হয়ে যায়। এ সময়ের মধ্যে নামাজ আদায় করা যায় না। সূর্য হলদে রং ধারণ করার আগেই আসরের নামাজের কাজা আদায় করে নিতে হবে এটি সবথেকে উত্তম।

জোহরের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম

যদি কখনো আমাদের যোহরের নামাজ সরে যায় তাহলে জোহরের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম অনুযায়ী নামাজটি আদায় করে নিতে হবে। তবুও নামাজ বাদ দেওয়া যাবে না। কারণ নামাজ হলো ফরজ ইবাদাত। আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেবেন তাই যদি কোন কারণে নামাজের ওয়াক্ত দেরি হয়ে যায় তাহলে পরে কাজা আদায় করে নিতে হবে।

যদি আপনার দায়িত্বের ছয় ওয়াক্তের কম নামাজের কাজা করা বাকি থাকে তাহলে প্রথমে জোহরের নামাজের কাজা আদায় করে নিতে হবে তারপরে আসরের ফরজ নামাজ আদায় করতে হবে। যদি আপনার দায়িত্বে ছয় ওয়াক্তের বেশি কাজা নামাজ থাকে তাহলে প্রথমে আপনাকে আসরের ফরজ নামাজ আদায় করে নিতে হবে এরপরে যোহরের নামাজ আদায় করলেও এটি শুদ্ধ হয়ে যাবে। আশা করি জোহরের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম জানতে পেরেছেন।

মাগরিবের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম

একজন মুসলিমের জন্য প্রতিদিন যে ইবাদত পালন করতে হয় সেটি হল নামাজ। মাগরিবের নামাজ আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদিও মুসলিম দের ওপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ তার মধ্যে মাগরিব অন্যতম একটি। মাগরিবের নামাজ কাজা হয়ে গেলে মাগরিবের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম অনুযায়ী সেই নামাজ আদায় করে নিতে হবে।

যদি মাগরিবের নামাজ কাজা হয়েছে এটা ভুলে যাই তাহলে এশার সালাতের পর পর মাগরিবের নামাজ আদায় করে নেওয়া যাবে। যে ব্যক্তির জিম্মায় কাজা নামাজ রয়েছে তার জন্য উত্তম হলো নফল নামাজের পরিবর্তে কাজা নামাজ আদায় করা। কারণ আল্লাহ তাআলা কারো কাজা নামাজের জন্য কিয়ামতের দিন প্রশ্ন করবেন।

মাগরিবের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম - মাগরিবের কাজা নামাজের নিয়তঃ নাওয়াইতুয়ান আকদিয়া লিল্লাহি তআলা আরবায়া রাকাআতি ছালাতিল মাগরিব ফায়েতাতি ফারযুল্লাহি তাআলা মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

আরো পড়ুনঃ রমজানের প্রথম ১০ দিনের আমল - রমজানের প্রথম দশ দিনের দোয়া

অর্থঃ অনেকে হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে মাগরিবের ফরজ তিন রাকাত কাজা নামাজ আদায় করছি। আল্লাহু আকবার।

আমাদের শেষ কথাঃ কাজা নামাজ পড়ার সময় - ফজরের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম ও সময়

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে কাজা নামাজ পড়ার সময়, মাগরিবের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম, আসরের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম, জোহরের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম, ফজরের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম ও সময়, ফজরের কাজা নামাজ পড়ার সময়, কাজা নামাজ আদায়ের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। যদি বিষয়টি না জেনে থাকেন তাহলে অবশ্যই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে নেবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪