ইউরোপের কোন দেশের ভিসা সহজে পাওয়া যায়
ইউরোপের কোন দেশের ভিসা সহজে পাওয়া যায় আপনি কি তা অনুসন্ধান করছেন? তবে এই পোস্টটি আপনার জন্য। ইউরোপের কোন দেশের ভিসা সহজে পাওয়া যায় এ বিষয়টি নিয়ে সবার ভেতরেই ব্যাপক জানার আগ্রহ রয়েছে। তাই আপনাদের সুবিধার্থে এই পোস্টে ইউরোপের কোন দেশের ভিসা সহজে পাওয়া যায় এ বিষয়টি বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করব।
আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষের কাছে বিদেশে যাবার ক্ষেত্রে সবার প্রথম পছন্দের কেন্দ্রে থাকে ইউরোপের দেশগুলো। কারণ সারা বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় ইউরোপের দেশগুলোতে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা অনেক বেশি থাকে। অনেকে তো শুধু ভ্রমণের নেশায় ইউরোপের দেশগুলোতে পাড়ি জমাতে চান। আজ এই পোস্টটি পুরোটা মনোযোগ দিয়ে পড়লে আপনারা ইউরোপের কোন দেশের ভিসা সহজে পাওয়া যায় সে সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ভাবে অবহিত হবেন।
পোস্ট সূচিপত্র - ইউরোপের কোন দেশের ভিসা সহজে পাওয়া যায় জেনে নিন
বাংলাদেশের মানুষ ইউরোপে যেতে চায় কেন?
ইউরোপ ভ্রমণ বা সেখানে বসবাস করা যেন আমাদের কাছে স্বপ্নের মত। সেখানকার বিলাসবহুল জীবনযাপন এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা খুব সহজেই আমাদেরকে আকৃষ্ট করে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত টাকা থাকা সত্ত্বেও আমরা অনেক সময় ভেবে বসি ইউরোপের দেশগুলোতে যাওয়া বুঝি অনেক কঠিন! বিষয়টি তেমন নয়। বরং, আপনি খুব সহজেই ইউরোপের ভিসা আবেদন করতে পারবেন। ইউরোপের কোন দেশের ভিসা সহজে পাওয়া যায় এই পোস্টে আমরা তা উল্লেখ করব।
বর্তমানে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ আমাদেরকে বেশ সহজেই তাদের দেশ ভ্রমণ করার জন্য ভিসা দিচ্ছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কিন্তু খুব সহজেই বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের কয়েকটি দেশে ভ্রমণ করতে পারি। ইউরোপের নামকরা দেশ সুইজারল্যান্ড, ভিয়েনা, জার্মানি, ফ্রান্সে বাংলাদেশের বহু মানুষ ভ্রমণ, চাকরি, পড়াশোনাসহ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে যেয়ে থাকে। সঠিক প্রসেসে ভিসা আবেদন করলে আপনিও খুব সহজে ইউরোপের দেশগুলোতে ভ্রমণ করতে পারবেন।
ইউরোপের কোন দেশের ভিসা সহজে পাওয়া যায়
আপনারা যারা বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করার কথা চিন্তা করছেন, তাদের অবশ্যই ইউরোপের কোন দেশের ভিসা সহজে পাওয়া যায় সে সম্পর্কিত তথ্য গুলো জেনে রাখা আবশ্যক। চলুন ইউরোপের কোন দেশের ভিসা সহজে পাওয়া যায় সে দেশগুলো সম্পর্কে জেনে নিই।
- সুইজারল্যান্ড: পশ্চিম ইউরোপের একটি দেশ যা পৃথিবীর স্বর্গ নামে খ্যাত সেটি হলো সুইজারল্যান্ড। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এবং চোখ জুড়ানো সব পাহাড় অরণ্য বেষ্টিত দেশ হলো এই সুইজারল্যান্ড। মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে পৃথিবীর সব দেশ থেকেই কম বেশি পর্যটক সুইজারল্যান্ডে প্রতিনিয়ত ভিড় করে। বর্তমানে সুইজারল্যান্ডের ভিসা পেতে বাংলাদেশ থেকে তেমন একটি কষ্ট করতে হচ্ছে না। আপনি অতি সহজে টুরিস্ট ভিসা অথবা স্টুডেন্ট ভিসায় সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার অ্যাপ্রভাল পেয়ে যাবেন।
- ফ্রান্স: ফুটবল এবং জেনেদিন জিদানের জন্য বিখ্যাত দেশ হলো ফ্রান্স। দেশটি ইউরোপেরর অন্যতম সুপার পাওয়ারও বটে। শিল্প সাহিত্য, শিক্ষা-দীক্ষা, আইফেল টাওয়ার সহ বহুবিধ নিদর্শন রয়েছে দেশটিতে। তবে সম্প্রতি ফ্রান্স বাংলাদেশিদের জন্য পারিবারিক ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা, পর্যটন ভিসা ইত্যাদি ক্যাটাগরিতে খুব সহজে ভিসা প্রদান করছে। আপনার যদি আইএলটিএস দেওয়া থাকে তবে খুব সহজে শিক্ষার জন্য ফ্রান্সে যেতে পারবেন।
- পর্তুগাল: অভিবাসীদের জন্য স্বর্গ বলা হয় যে দেশটিকে সেটি হল পর্তুগাল। ইউরোপের কোন দেশের ভিসা সহজে পাওয়া যায়, তবে তার উত্তর হবে পর্তুগাল। কারণ, পর্তুগালে কাজ করার জন্য ভিসা পাওয়া বেশ সহজ। তবে ভ্রমণ এবং শিক্ষার জন্য পর্তুগালে যেতে হলে আপনার আইইএলটিএস স্কোর কমপক্ষে ৬ থাকতে হবে।
- হাঙ্গেরি: বাংলাদেশীদের জন্য হাঙ্গেরীর ভিসা প্রাপ্তি বেশ সহজ। ২০২১ সালের এক সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে আবেদনকারী যারা হাঙ্গেরি যেতে ইচ্ছুক এমন মানুষদের শতকরা ৯৫% হাঙ্গেরীতে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। তবে যারা গিয়েছিল তারা বেশিরভাগই স্টুডেন্ট ভিসায় আবেদন করেছিল।
- লাটভিয়া: বাল্টিক সাগরের পূর্ব দিকে অবস্থিত এই দেশটিতে স্টুডেন্ট ভিসায় বাংলাদেশীদের জন্য গমন করা বেশ সহজ। এছাড়াও বিভিন্ন কাজের জন্য এই দেশটিতে যাওয়ার ভিসা আবেদন করা যায়। সম্প্রতি এই দেশটিতে ভিসা প্রাপ্তির হার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
- মাল্টা: এটি ইউরোপের সেনজেনভুক্ত একটি দেশ। এই দেশটিকে অনেক প্রবাসী কাজের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে মাল্টার ভিসা প্রাপ্তি বেশ সহজ। স্টুডেন্ট ও পর্যটকদের ক্ষেত্রে খরচ কম হলেও অন্যান্য অফিসিয়াল কাজের জন্য মাল্টা গেলে আপনাকে বেশ অর্থ খরচ করতে হবে।
- লিথুনিয়া: সুইডেনের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র লিথুনিয়া শিক্ষার হার প্রায় ৯৯%। শিক্ষার মান অত্যন্ত ভালো হওয়ার কারণে বাংলাদেশ থেকে বহু স্টুডেন্ট সহজেই লিথুনিয়ার ভিসা নিয়ে সেখানে উচ্চতর স্টাডিজের জন্য যেতে পারে।
ইউরোপের আরো যেসব দেশে সহজে ভিসা নিয়ে যেতে পারবেন
পোস্টের পূর্ববর্তী অংশ থেকে ইউরোপের কোন দেশের ভিসা সহজে পাওয়া যায় সে সকল কয়েকটি দেশ সম্পর্কে জেনেছেন। সেনজেন ও ননসেনজেন ভুক্ত আরো কিছু ইউরোপীয় দেশ রয়েছে যেখানকার ভিসা আপনি বাংলাদেশ থেকে খুব সহজেই পেয়ে যাবেন এবং সেখানে অল্প খরচে গমন করতে পারবেন। আপনি যদি স্টুডেন্ট অথবা টুরিস্ট ভিসার আবেদন করেন সেক্ষেত্রে ভিসা প্রাপ্তি বেশ সহজ হবে। চলুন সে সকল দেশের একটি তালিকা দেখে নিই।
- নেদারল্যান্ড
- জার্মানি
- ইতালি
- বেলজিয়াম
- চেক প্রজাতন্ত্র
- অস্ট্রিয়া
- লুক্সেমবার্গ
- নরওয়ে
- পোল্যান্ড
- ডেনমার্ক
- এস্তোনিয়া
- ফিনল্যান্ড
- গ্রীস
- আইসল্যান্ড
- ইংল্যান্ড
ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে
প্রিয় বন্ধুরা আপনারা ইতোমধ্যে ইউরোপের কোন দেশের ভিসা সহজে পাওয়া যায় সে সমস্ত দেশগুলো সম্পর্কে জেনেছেন। এখন আপনি যদি ইউরোপের কোন দেশে ভ্রমণ করতে চান তবে কি পরিমান টাকা খরচ হবে এই বিষয়টি জেনে নেওয়া বেশ গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নে ইউরোপের কোন দেশে যেতে কি পরিমান টাকা খরচ হবে তা তুলে ধরা হলো।
- ফ্রান্সের ভিসা ফি ও খরচ: ভিসার ক্যাটাগরির উপর ফ্রান্সের ভিসার ফি নির্ভর করে থাকে। ফ্রান্সের সেনজেন ভিসা ও এয়ারপোর্ট ভিসার ফি ৮০ ইউরো। অল্প সময়ের জন্য যে সকল ভিসা করা হয় সেগুলোর ফি ৬০ ইউরো এবং দীর্ঘমেয়াদি ভিসার ফি ৯৯ ইউরো পর্যন্ত হয়ে থাকে।
- পর্তুগালের ভিসা ফি ও খরচ: পর্তুগালে প্রবাসীদের খরচ অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের তুলনায় কিছুটা কম। সেখানে পর্তুগালের পাসপোর্টধারী নাগরিকদের জন্য ভিসা ফি ৩০ ইউরো, মাল্টিপল এন্ট্রি ৯০ ইউরো এবং যাদের ভিসা প্রয়োজন নেই তাদের ক্ষেত্রে ৫০ ইউরো।
- সুইজারল্যান্ডের ভিসা ফি ও খরচ: প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য যেহেতু সকলে সুইজারল্যান্ড যেতে চায়, তাই সুইজারল্যান্ডে যেতে কত খরচ হবে সেটি অনেকেই জানতে চান। সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার ভিসা ফি বাংলাদেশী টাকায় ৮৮০০ এবং শিশুদের জন্য তা অর্ধেক ৪৪০০।
- লিথুনিয়ার ভিসা ফি ও খরচ: লিথুনিয়ায় যাওয়ার জন্য স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া বেশ সহজ। লিথুনিয়ায় শিক্ষার হার প্রায় ৯৯%। সেখানে যেতে হলে আপনাকে ভিসা ফি হিসাবে ৮০ ইউরো গুনতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে ৪০ ইউরো প্রযোজ্য হবে।
- হাঙ্গেরির ভিসা ফি ও খরচ: বাংলাদেশ থেকে হাঙ্গেরিতে গমন করা শিক্ষার্থীদের হার অনেক বেশি। হাঙ্গেরিতে যাওয়ার জন্য আপনাকে ৮০ ইউরো গুনতে হবে যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৮৫০০ টাকা।
- মাল্টার ভিসা ফি ও খরচ: মালটাতে ভিসার খরচ একটু বেশি। মাল্টাতে অফিসিয়াল কাজের জন্য ভিসা প্রসেসিং সর্বমোট খরচ ৭২০ ইউরো। তার মধ্যে ভিসা ফি ২৮০ ইউরো এবং লাইসেন্স বাবদ ২০০ ইউরো। এছাড়াও ব্লু কার্ডের জন্য ১৪০ ইউরো খরচ করতে হবে। তবে ডি টাইপ ভিসার জন্য খরচ হবে ১০০ ইউরো। আশা করি ইউরোপের কোন দেশের ভিসা সহজে পাওয়া যায় তা অবগত হয়েছেন।
উপসংহারঃ ইউরোপের দেশসমূহে ভিসা প্রাপ্তি
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, পরিশেষে এটি প্রত্যাশা করছি যে, এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদের জন্য ইউরোপের কোন দেশে যাওয়ার সহজ এবং কোন দেশে যেতে কি পরিমান টাকা খরচ হয় সে বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ দিক নির্দেশনা ও যথেষ্ট তথ্য দিতে সক্ষম হয়েছি। আশা করি স্বপ্নের ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে এই পোস্টটি আপনার জন্য বেশ সহায়ক হবে। তাই পোস্টের কার্যকারিতা বাড়াতে এখনি পোস্টটি অন্যদের কাছে এখনই শেয়ার করুন এবং আমাদের সাথেই থাকুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url